কুমিল্লায় কোচিং সেন্টারে আটকে রেখে ছাত্রীকে ধর্ষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

নিজের কোচিং সেন্টার ভালোভাবে চালানোর জন্য তারেকুর রহমান চৌধুরী ৬ মাসের জন্য ২ লাখ টাকা ধার চায় তার সহজ-সরল খালার কাছে। বিনিময়ে সে খালার সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া কিশোরী মেয়েকে সেই কোচিং সেন্টারে পড়িয়ে সমাপনী পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করিয়ে দেবে বলে প্রস্তাবও দেয়।

অশিক্ষিত খালা-খালু মেয়ের লেখাপড়ার স্বার্থে এ প্রস্তাবে রাজি হয়ে তারেকুর রহমানের হাতে ২ লাখ টাকা তুলে দেন। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও তারা বুঝতে পারেননি যে, লম্পট-প্রতারক তারেকের মনে ছিল কুবুদ্ধি।

সে একদিন ছুটির পরও কোচিং সেন্টারে আটকে রেখে খালার কিশোরী মেয়েটি ধর্ষণ করে এবং সেই দৃশ্য ভিডিও করে রাখে। পরে সেই ভিডিও প্রকাশ করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে সে আরো কয়েকদিন ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে গ্রামবাসীর চাপে ধর্ষক তারেক তাকে বিয়ে করে নেবে বলে অঙ্গীকার করে। কিন্তু মেয়েটি পরে একটি পুত্রসন্তান প্রসব করলে তারেক ও তার পরিবার বিয়ের কথা অস্বীকার করে।

অগত্যা ঘটনা বর্ণনা করে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ নং আদালতে ওই ধর্ষক তারেকসহ ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

গতকাল রবিবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রফিকুল ইসলাম ধর্ষণ ঘটনার বিস্তারিত শুনানির পর মামলাটি আমলে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম থানাকে সরাসরি এফআইআর-এর জন্য আদেশ প্রদান করেন এবং সেই সাথে ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদেও গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ধর্ষণ মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিশাত সালাউদ্দিন।

জানা যায়, এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের লহ্মীপুর গ্রামের কোচিং সেন্টারে। ধর্ষক তারেকুর রহমান চৌধুরী ওই গ্রামের মৃত রেজাউর রহমান চৌধুরীর ছেলে।

গত ২৪ এপ্রিল সপ্তম শ্রেণীর ওই ছাত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে ফেনী জেলা সদরের একটি ডায়াগনাস্টিক সেন্টাওে নেওয়া হয়। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম করালে অন্তঃসত্ত্বার রিপোর্ট আসে।

ধর্ষণের শিকার ছাত্রী জানান, কোচিং সেন্টারে পড়ার সময় তারেকুর রহমান চৌধুরী তাকে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে একাধিকবার ধর্ষণ করে। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে এ ঘটনা তিনি কাউকে বলেননি।

পরবর্তীতে মেয়ের ধর্ষিতা হওয়ার ঘটনার বিচার চাইতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানান বাবা। এই নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল সালিশ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীকে বিয়ে করতে হবে ধর্ষক তারেকুরকে। তারেক তাতে রাজি হয়ে আশ্বাস দেয়, বাচ্চা ভূমিষ্ট হওয়ার পর বিয়ে করবে। কিছু দিন অতিক্রম হলে ধর্ষক বাচ্চা নষ্ট করার জন্য চাপ দিয়ে ব্যর্থ হয়।

এরপর গত ১২ আগস্ট ওই ছাত্রী একটি পুত্রসন্তান প্রসব করে। কিন্তু বিয়ের পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত ২৫ সেপ্টেম্বর আবারও সালিশ বৈঠক বসলে ধর্ষক ও তার স্বজনরা বিয়েতে অস্বীকার করে।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্য আসামীরা হলো চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের লহ্মীপুর গ্রামের মৃত মো. করিমের ছেলে জসিম উদ্দিন, ধর্ষক তারেকুর রহমান চৌধুরীর ভাই তৌফিকুর রহমান চৌধুরী, তৌহিদুর রহমান চৌধুরী ও আবুল খায়েরের ছেলে রমজান আলী ভূঁইয়া।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
error: ধন্যবাদ!